free tracking

My Blog

My WordPress Blog

জর্দা না সিগারেট, মানুষের শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতি করে কোনটি, বাঁচতে চাইলে জেনেনিন!

সিগারেটের চেয়েও ভয়ংকর, নেশা আরও প্রবল—এই শব্দগুলো দিয়ে যদি একটি বস্তুকে বর্ণনা করতে হয়, তাহলে তা হলো সুপারি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন দেশের খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জেহাদ খান। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৩০-৩৫ শতাংশ ক্যান্সার সরাসরি সুপারি খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

সুপারি: ‘নীরব ঘাতক’ যাকে আমরা অবহেলা করিভিডিও বার্তায় ডা. জেহাদ খান বলেন, হৃদরোগ একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ, এবং ধূমপান বন্ধ করলেই এই রোগ ২৫ শতাংশ কমে যায়। তবে তিনি তীব্রভাবে আক্ষেপ করে বলেন, “সুপারির ব্যাপারে আমাদের কোনো আলোচনা নেই। অথচ এটি সিগারেটের চেয়েও চারগুণ বেশি ক্ষতিকর।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন, “সিগারেটের ধোঁয়া তো কিছুটা শরীরের বাইরে যায়, কিন্তু সুপারি পুরোটাই শরীরে প্রবেশ করে, যার ক্ষতি হয় আরও বেশি। এটি শুধু মুখে লাগায় না, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।”

ভয়াবহ আসক্তি: “সুপারি না পেলে যেন মৃত্যু ঘনিয়ে আসে”সুপারির নেশা কতটা মারাত্মক হতে পারে, তার একটি বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরেন ডা. জেহাদ খান।একজন রোগী অস্ত্রোপচারের পর এতটাই অস্থির হয়ে ওঠেন যে, চিকিৎসকরা ভাবেন তিনি মৃত্যুর কোঠায় পৌঁছেছেন। কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, তিনি সুপারি না খাওয়ার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। রোগী নিজে বলেন, “সার, আপনি সুপারি এনে দেন, আমি ভালো হয়ে যাব।”

তিনি আরও জানান, এক ব্যক্তি মাঝরাতে, রাত ১২টার সময় বাজারে গিয়ে পাশের দোকানির কাছ থেকে সুপারি চেয়েছেন, কারণ তার ঘরে সুপারি শেষ হয়ে গিয়েছিল।

ক্যান্সারের প্রধান কারণ সুপারিডা. জেহাদ আরও বলেন, “আমাদের দেশে মুখ ও গলার ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় কারণ হলো সুপারি।”আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সুপারি একটি স্বীকৃত ‘কার্সিনোজেনিক’ পদার্থ, অর্থাৎ এটি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী।বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং ভয়াবহ হারে মুখ, গলা এবং খাদ্যনালীর ক্যান্সার তৈরি করছে।

একটি জরিপের তথ্য অনুযায়ী—বাংলাদেশে মোট ক্যান্সারের ৩০-৩৫% সুপারির কারণে হয়ে থাকে। শুধু মুখ ও গলার ক্যান্সার নয়, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এমনকি হজম সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সাথেও সুপারির গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

‘শুধু ধূমপান নয়, সুপারিকেও বলতে হবে বিদায়’চিকিৎসকদের মতে, ধূমপান ও তামাকবিরোধী সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হলেও সুপারির ভয়াবহতা নিয়ে প্রায় কোনো কথাই হয় না। অথচ এর ক্ষতি ধূমপানের চেয়েও ভয়ংকর হতে পারে।

সুপারি একদিকে যেমন নেশার বস্তু, অন্যদিকে তেমনি মৃত্যুর পথপ্রদর্শক। আমাদের দেশে এটি সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য হলেও, এর ক্ষতিকর দিক এখনই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা না করলে ভবিষ্যতে ক্যান্সার মহামারি রূপে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সুপারির ভয়াবহতা নিয়ে এভাবে একজন বিশেষজ্ঞের সরব হওয়া নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়—এবং সময়ের দাবি, এখনই শুরু হোক ‘সুপারি বিরোধী সচেতনতা আন্দোলন’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *