free tracking

My Blog

My WordPress Blog

রমজানের রোজায় এক বছরের নাকি জীবনের সব গুনাহ মাফ হয়?

আরবি বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস রমজান গুনাহ মাফ ও তাকওয়া অর্জনের মাস। মহান রাব্বুল আলামিন মুমিনদের জন্য এ মাসে অফুরন্ত সওয়াব অর্জনের সুযোগ রেখেছেন। আবার এ মাসে অল্প আমলেই আছে অনেক বেশি ফজিলত। অন্যদিকে মহিমান্বিত এ মাসেই পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে।

ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান মাস- যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে লোকেদের পথ প্রদর্শক এবং হেদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনারূপে এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা রাখে আর যে পীড়িত কিংবা সফরে আছে, সে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)

পবিত্র এ মাসে রহমতের দরজা খুলে দেয়া হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- রমজান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়, আর শৃঙ্খলিত (শিকলবন্দি) করে দেয়া হয় শয়তানকে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৭৭৮)

অন্যদিকে রমজান মাসের রোজা রাখার মধ্যদিয়ে পরকালে জান্নাত লাভেরও সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, এক মরুবাসী সাহাবী রাসুল (সা.) এর কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন- আমাকে এমন আমলের পথনির্দেশ করুন, যা আমল করলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। জবাবে নবীজি তাকে বললেন- তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সঙ্গে কোনোকিছু শরিক করবে না, (পাঁচ ওয়াক্ত) ফরজ সালাত (নামাজ) আদায় করবে, ফরজ যাকাত আদায় করবে ও রমজানের সাওম (রোজা) পালন করবে।

পরে ওই সাহাবী বললেন, আমার প্রাণ যার হাতে তাঁর কসম, আমি এর উপর বৃদ্ধি (এর বেশি আমল) করব না। এরপর তিনি যখন ফিরে গেলেন তখন রাসুল (সা.) বললেন- কেউ যদি জান্নাতি লোক দেখতে আগ্রহী হয়, সে যেন তার দিকে তাকিয়ে দেখে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৩১৫)

তবে ফজিলতপূর্ণ মাস রমজানে রোজা রাখার মধ্যদিয়ে গুনাহ মাফ হওয়া নিয়ে অনেককেই দুই রকম কথা বলতে শোনা যায়। যেমন- কেউ কেউ বলেন যে রমজানের রোজা রাখলে এক বছরের গুনাহ মাফ হয়। আবার কেউ কেউ বলেন এক বছরের নয়, বরং জীবনের সব গুনাহ মাফ হয়। তাহলে কোনটি ঠিক?

এ ক্ষেত্রে হাদিস অনুযায়ী রমজানের রোজায় অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াবের আশায় রমজানের সিয়াম (রোজা) পালন করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি লায়লাতুল ক্বদরে ঈমান ও সাওয়াবের আশায় রাত জাগরণ (ইবাদত) করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৬৫৪)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদাত করে, তার পেছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৭৮০)

এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সগিরা গুনাহ মাফ হলেও কবীরা গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ হয় না। সুতরাং উপরের হাদিসগুলোয় সগিরা গুনাহ মাফের কথা বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *