ভারতের মহারাষ্ট্রে তারাবির নামাজ চলাকালে একটি মসজিদের গেটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে। হোলি উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত বার্ষিক শিমগা শোভাযাত্রার সময় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের সামনেই কাঠের গুঁড়ি দিয়ে আঘাত করে মসজিদের গেট ভেঙে ফেলা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (১২ মার্চ) মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণ অঞ্চলে। খবর ইন্ডিয়া টুডে।
কী ঘটেছিল?
জানা গেছে, বার্ষিক শিমগা শোভাযাত্রাটি দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এটি একটি নিকটবর্তী মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। ঐতিহ্য অনুযায়ী, শোভাযাত্রার অংশগ্রহণকারীরা লম্বা একটি গাছের গুঁড়ি বহন করে এবং বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে তা স্পর্শ করায়। তবে, মসজিদের গেট ভেঙে ফেলার ঘটনায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তবে মসজিদে জোর করে প্রবেশের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশের বক্তব্য
রত্নগিরির এসপি ধনঞ্জয় কুলকার্নি জানিয়েছেন, “শোভাযাত্রাটি ঐতিহ্যবাহী এবং সাধারণত বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে গাছের গুঁড়ি স্পর্শ করানো হয়। মসজিদেও একই কাজ করা হয়েছিল। তবে এটি ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকে করা হয়নি।” তিনি আরও জানান, মসজিদের গেটের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনার তদন্ত চলছে।
ভিডিও ভাইরাল ও বিতর্ক
এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। অনেকে এ ঘটনাকে ধর্মীয় সহিংসতা বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, শিবসেনা নেতা নীলেশ রানে দাবি করেছেন, ঘটনাটি অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, পুলিশের সামনেই যদি মসজিদে হামলা হয়, তাহলে জনগণের নিরাপত্তা কোথায়? মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে বিষয়টির সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশি পদক্ষেপ
এ ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে। তবে অভিযোগ রয়েছে যে, মসজিদের সামনে বেআইনি সমাবেশ এবং স্লোগান দেওয়ার বিষয়েও আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পরিস্থিতি এখন কেমন?
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবুও ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিক অঙ্গনে বিতর্ক থামছে না।
Leave a Reply