নতুন পাঠ্যবইয়ে ২০২২ সালের গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত ইতিহাসে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার নাম বাদ দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বইটিতে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার এক দফা দাবি এবং ঢাকা অভিমুখী জনস্রোতের কথা বলা হলেও, আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার নামের কোনো উল্লেখ নেই।
এ বিষয়ে পরিমার্জন কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রথমে বইয়ে শেখ হাসিনার নাম ছিল, তবে তারা অন্য বইগুলোর ক্ষেত্রে এর সঠিক ব্যাখ্যা না পাওয়ায় নামটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে অনেকেই মনে করছেন, বইটি আরও সঠিকভাবে পরিমার্জিত হতে পারত।
এছাড়া, সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইয়ে একটি কবিতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কবিতার ভাষা নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা সমালোচনা করেছেন, যার ফলে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
বইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহারের ফলে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, এবং ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ নামের একটি সংগঠন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। পরে গ্রাফিতিটি সংশোধন করা হলেও আদিবাসী জনগণের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বইয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘সাবেক সেনাপ্রধান’ হিসেবে উল্লেখ করার পর বিএনপি এটি ভুল হিসেবে দাবি করে, এবং এনসিটিবি বিষয়টি সংশোধন করেছে। তবে বিতর্কের তীব্রতা কমেনি।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন প্রক্রিয়া আরো সতর্কতার সঙ্গে করা উচিত ছিল, যাতে সঠিক ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে পারে। তারা মনে করছেন, পাঠ্যবইয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব দেশ এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, তারা কখনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে পাঠ্যবই সংশোধন করেননি, তবে বিতর্কিত বিষয়গুলো সংশোধন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে সঠিক এবং নিরপেক্ষ ইতিহাস পৌঁছানোর জন্য তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এটি একটি উদাহরণ, যেখানে পাঠ্যবইয়ের সামগ্রিক পরিমার্জন প্রক্রিয়া রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আরও নিরপেক্ষতা এবং সতর্কতা আনতে হবে।
Leave a Reply