শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে মুখের ভেতর থেকে গন্ধ বের হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে দুর্গন্ধের তীব্রতা এতটাই থাকে যে অন্যের সঙ্গে কথা বলার সময় এ নিয়ে ভীষণ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। যাদের নিঃশ্বাসের গন্ধ স্বাভাবিক, নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যায় তারাও এরকম দুর্গন্ধজনিত অবস্থায় পড়তে পারেন।
চিকিৎসাশাস্ত্রে শ্বাস ছাড়ার সময় এমন খারাপ গন্ধ বের হওয়াটাকে হ্যালিটোসিস বলা হয়। এর ফলে চূড়ান্ত মাত্রায় মুখের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। অথচ দৈনন্দিন জীবনধারণে একটু সাবধান থাকলেই এড়ানো যায় এই স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ
অতিরিক্ত গন্ধযুক্ত খাবার গ্রহণ
প্রতিটি খাবারেরই একটা নিজস্ব গন্ধ থাকে। খাবার চাবানোর সময় এই গন্ধ মুখ গহ্বরে ছড়িয়ে পড়ে। খাবারের মধ্যে থাকা উপাদানসহ এই গন্ধ রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে ফুসফুসে যেয়ে শ্বাস ছাড়ার বাতাসকে প্রভাবিত করে। একই ঘটনা ঘটে রসুন, পেঁয়াজ বা নানা রকম মশলাদার খাবারের ক্ষেত্রেও।
দাঁতের যত্নে অবহেলা
প্রতিদিন নিয়ম মেনে দাঁত ব্রাশ না করলে টুকরো খাবার দাঁতের ফাকেই থেকে যায়। খাবার জমা হওয়া এই স্থানগুলো ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্র। জীবাণুর বংশ বিস্তারের মধ্যে দিয়ে দাঁত, মাড়ি এবং জিহ্বায় জমা হওয়া খাবারে পচন ধরতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে মুখের মধ্যে অপ্রীতিকর গন্ধ হয়।
জিহ্বায় দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া
অনেক সময় ধরে অপরিষ্কার থাকা জিহ্বায় জন্মানো ব্যাকটেরিয়া খাবারের সংস্পর্শে এলে খাবারের অ্যামিনো অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। এই বিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় বাজে গন্ধযুক্ত সালফার যৌগ, যা শ্বাস ছাড়ার সময় মুখ দিয়ে নির্গত হয়।
শুষ্ক মুখ
অধিকাংশ ক্ষেত্রে হ্যালিটোসিসের প্রধান উপসর্গ থাকে মুখের শুষ্কতা, চিকিৎসার ভাষায় যেটি জেরোস্টোমিয়া হিসেবে পরিচিত। এ সময় উল্লেখযোগ্য হারে মুখের প্রয়োজনীয় লালা উৎপাদন হ্রাস পায়। এতে মুখের স্বয়ংক্রিয় আত্ম-বিশোধন প্রক্রিয়া নষ্ট হওয়ায় আহারের পরে অবশিষ্ট খাদ্যকণাগুলোর অপসারণ হয় না।
Leave a Reply