দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস। মাত্র আট মাসে ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে তিনি নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে পরিশোধ করা হয়েছে ২ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণ, বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা। দেশের অর্থনীতিতে যেন লেগেছে এক জাদুকরী ছোঁয়া।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে দেশ দেখেছে দুর্নীতি, লুটপাট আর অর্থপাচারের নজির। অর্থনীতি পৌঁছে গিয়েছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায়। তবে ড. মোহাম্মদ ইউনুস দায়িত্ব নেওয়ার পর পাল্টে গেছে সেই চিত্র। বদলে গেছে দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা। ফুলেফেঁপে উঠেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
আওয়ামী শাসন আমলে গত বছরের জুলাই মাসে আইএমএফ-এর হিসাব পদ্ধতি বিএম সিক্স অনুযায়ী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২০.৫৪ বিলিয়ন ডলার। যা আট মাসে বেড়ে হয়েছে ২১.৪০ বিলিয়ন ডলার। ক্রস রিজার্ভের পরিমাণ এখন ২৭ বিলিয়নের কাছাকাছি।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বৈদেশিক দেনা ছিল প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা, যা এখন নেমে এসেছে ১০ হাজার কোটি টাকায়। অর্থাৎ, সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এ খাতে ২৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে। এই দেনা পরিশোধ না হলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়াত ২৯ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
এছাড়াও দেশের অর্থনীতিকে আরও মজবুত করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে’ ৪০টি দেশের ৬০০-র বেশি বিনিয়োগকারী অংশ নেন। এতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাদের মধ্যে চীনের হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বাংলাদেশে ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের চুক্তি করেছে, যা অন্যতম উল্লেখযোগ্য।
চীন সফর শেষে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পেয়েছে ২১০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ও ঋণের প্রস্তাব, যা দেশের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রযুক্তি ও সেবা খাতকে ঘিরেও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে।
মাত্র আট মাসে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতিতে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। এই সময়ে বাংলাদেশ পৌঁছেছে এক নতুন উচ্চতায়।
Leave a Reply