আমাদের দৈনন্দিন খাবার তালিকায় আর কিছু থাকুক আর না থাকুক ভাত থাকবেই। ভাত যদি ঝরঝরে আর ফুলের মতো সুন্দর ধবধবে হয় তাহলে লবণ পেঁয়াজ দিয়েই খাওয়া যায়। আবার সেই ভাত যদি গলে যায় বা আঠা আঠা হয়ে যায়, অনেক রকম তরকারি থাকলেও মন মতো খাওয়া যায় না।
আমাদের রান্নাঘরে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় প্রায়ই।
ভাত মাড় গালার পরে মোটামুটি ঝরঝরে থাকলেও খাওয়ার সময়ে দেখা যায় ভাত প্রায় গায়ে গায়ে লেগে গেছে। ফুলের মতো ঝুরঝুরে ভাত আর হয় না।
তবে আপনি চাইলে কিছু সহজ উপায়ে একদম ঝরঝরে ভাত রান্না করতে পারবেন। আর খাবার টেবিলে সকলের মুখেই সেই ভাত খেয়ে তৃপ্তির হাসিও দেখতে পারবেন।
শুধু জেনে রাখতে হবে ছোট্ট কিছু টোটকা। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
বড় দানার চাল
সম্ভব হলে সবসময় ভাত করার জন্য একটু লম্বা বড় দানার চাল নিন। এতে চাল নিচের দিকে লেগে যাবে না।
বড় দানার চাল একে অন্যের গায়ে লেগে থাকে কম। এতে ভাত হবে।
আগে ভিজিয়ে রাখুন
রান্নার করার আগে চাল অধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে পারলে ভাল। এতে চাল নরম হয়ে আসে। ফলে খুব বেশি সময় ধরে আগুনের তাপে চাল রাখতে হয় না।
তাই ভাত ঝরঝরে থাকে।
বেশি জল দেবেন না
চাল যখন ফুটবে তখন অনেক জল দেবেন না। যত চাল তার দ্বিগুণ জল দেবেন মাপ করে। বেশি জল অনেক সময়ে ভাত জ্বলজ্বলে করে দেয়। তাই মাপ অনুযায়ী জল দিলে ভাত ভাল হবে।
অন্য পাত্রে ভাত রাখুন
আমরা সাধারণত হাড়ি বা ডেকচিতে রেখে দিই ঢাকা দিয়ে। হাড়ির গরমে ভাত আরও সিদ্ধ হয়ে যায়। ফলে আরও বেশি লেগে যায়। চেষ্টা করুন ভাত হওয়ার পর ভাত অন্য কোনও একটি পাত্রে রেখে দেওয়ার। এতে সাধারণ ঘরের তাপমাত্রায় ভাত থাকবে। অতিরিক্ত উত্তাপ পাবে না আর বেশি গলেও যাবে না।
সঠিক পাত্র বাছা জরুরি
অন্য পাত্রে রাখার জন্যেও এমন পাত্র বাছবেন না যাতে ভাত একসঙ্গে লেগে থাকে এক জায়গায়। মানে ছোট কোনও পাত্র নেবেন না। একটু বড় আর ছড়ানো পাত্র নেবেন। এই পাত্রের মধ্যে রান্না করা ভাত ছড়িয়ে রাখুন। এতেও ভাত ঠিক থাকবে।
ফ্যানের নিচে রাখুন
দেরাদুন রাইস বা বাসমতী রাইস দিয়ে পোলাও বা ফ্রায়েড রাইস বা ভালো কোনো কিছু রান্না করার সময়ে এই পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাধারণ চাল রান্না করার সময়েও কিন্তু এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। যে পাত্রে ভাত রাখবেন সেই পাত্রের মুখ খানিক সময়ের জন্য খুলে রাখুন। এতে ভাতের জলীয় ভাব চলে যাবে তাড়াতাড়ি আর ভাত ঝরঝরে থাকবে।
কম আঁচে রান্না করা
কম আঁচে আস্তে আস্তে রান্না করলে ভাত কম গলে। এতে সময় একটু বেশি লাগলেও ভাত কিন্তু খুব ভাল হয়। কম আঁচে বেশি সময় নিয়ে হলে ভাত সুসিদ্ধ হয় ভিতর থেকে। আর সব ভাত ঠিক সময় মতো সিদ্ধ হলে লেগে যায় না। ফলে একে অন্যের সঙ্গে লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।
ভাত করার সময় বেশি নাড়বেন না
ভাত বেশি নাড়লে ভেঙে যায়। এই ভাঙা চালের অংশ গলে গিয়ে ভাত স্টিকি করে দেয়। তাই আস্তে আস্তে সময় নিয়ে ভাত করুন। কিন্তু বেশি নাড়বেন না। এক বা দু’বার হাতা দিয়ে নেড়ে দিন যাতে নিচে লেগে না যায় তাও ২০ মিনিট পর পর।
পানিতে পরে চাল দিন
আগে পানি বসিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এবার চাল দিন। চাল ভালো হলে আর আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা থাকলে বেশি সময় লাগবে না হতে, আর ভালো সিদ্ধ হবে। তাড়াতাড়িও হয়ে যাবে।
ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নেওয়া
আমরা ভাতের মাড় ফেলে দেওয়ার পর ভাত রেখে দিই। এই সময়ে একটি কাজ করুন। ভাত অল্প একটু ঠাণ্ডা পানিতেদ আরেকবার ধুয়ে নিন। এতে ভাতের তাপ কমে যাবে, আঠা আঠা ভাব কমে যাবে।
সূত্র : নিউজ ১৮
Leave a Reply