free tracking

My Blog

My WordPress Blog

দেশের ব্রয়লার মুরগীতে পাওয়া গেলো জাপানের ভাইরাস!

জাপানের বাজারে সম্প্রতি ব্রয়লার মুরগির মাংসে এক নতুন ধরনের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত হয়েছে, যার নাম ইশেরেশিয়া আলবার্টি বা ই. আলবার্টি। এটি মূলত ই-কলাই ব্যাকটেরিয়ার একটি ভেরিয়েশন, তবে এর সংক্রমণ ক্ষমতা এবং মানবদেহে প্রভাব অনেক বেশি মারাত্মক। ব্যাকটেরিয়াটির সংক্রমণে জাপানে ইতোমধ্যে শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই ফুড পয়জনিং, ডায়রিয়া এবং কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। এই সংক্রমণ সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে ধারণা করা হচ্ছে—সংক্রমিত ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়ার মাধ্যমেই এই জীবাণু মানবদেহে ছড়াচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে জাপানি গবেষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশেও একটি গবেষণা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জায়েদুল হাসান। তিনি ২০১৯ সালে জাপানের ওসাকা প্রিফেকচার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন এবং বর্তমানে ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেএসপিএস ফেলোশিপের অধীনে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণায় যুক্ত আছেন। তার তত্ত্বাবধানে দেশের চারটি জেলা থেকে ১৭টি ব্রয়লার মুরগির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালানো হয়। বিস্ময়করভাবে দেখা যায়, সবগুলো নমুনায়ই ই. আলবার্টি ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব রয়েছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলের বেশ কিছু দোকান থেকে সংগৃহীত মাংসেও একই ধরনের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোকানগুলোতে মুরগি প্রক্রিয়াকরণের সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করায় এই জীবাণু মাংসে প্রবেশ করছে। শুধু মাংসেই নয়, মুরগির বিষ্ঠা, মাংস কাটার ছুরি, দোকান কর্মীর হাত এবং অন্যান্য সরঞ্জামেও এই জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ই. আলবার্টি একটি জোনোটিক জীবাণু, অর্থাৎ এটি প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। এই জীবাণু শুধু পেটের অসুখ নয়, বরং মানবদেহে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে, ফলে রোগ সারাতে ব্যবহৃত ওষুধ ব্যর্থ হতে পারে। গবেষণা অনুযায়ী, এই জীবাণু সংক্রমিত হলে অন্তত একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারানোর সম্ভাবনা ৯৪ শতাংশ, যা ভবিষ্যতে আরও জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্ম দিতে পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মেও।

তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, ব্রয়লার মুরগির মাংসে সাধারণত সহনীয় মাত্রার নিচে অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতুর অবশিষ্টাংশ থাকে, যা সরাসরি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে বর্তমানে যে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে, তা থেকে রক্ষা পেতে হলে খাদ্য প্রস্তুত ও গ্রহণে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মাংস ভালোভাবে ধুয়ে এবং পর্যাপ্ত সময় ধরে রান্না করলে জীবাণুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসে।

সূত্র:https://youtu.be/u4ACwToMeqM?si=8TXZPAIyHsziAX_2

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *