বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের অবিবাহিত হওয়া জরুরি বলে মত দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “পুলিশ ক্যাডারে কাউকে সুপারিশ করার আগে তাঁর বৈবাহিক অবস্থা, শারীরিক যোগ্যতা ও মানসিক ফিটনেস ভালোভাবে যাচাই করা দরকার।”
রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
অনুষ্ঠানে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই সদস্য তাঁদের দাবিদাওয়া উত্থাপন করেন। ঢাকা জেলার নারী পুলিশ কনস্টেবল সামিয়া স্বর্ণা পুলিশ সদস্যদের জন্য এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ অতিরিক্ত ভাতা দাবি করেন। অপরদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের এএসপি মো. আল আসাদ পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানান।
তিনি বলেন, “পুলিশকে প্রভাবমুক্ত রাখতে হলে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। অথচ পুলিশ সংস্কার কমিশনে বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও স্বাধীন কমিশন নিয়ে আলোচনা হয়নি।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁদের এসব দাবিকে যৌক্তিক উল্লেখ করে দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।
মতবিনিময় পর্বে ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান বলেন, “পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ার পর নয়, বরং তার আগে থেকেই প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, উচ্চতা ও ফিটনেস যাচাই করা উচিত। এতে করে অযোগ্য কাউকে নিয়ে পরে সমস্যায় পড়তে হবে না।”
তিনি আরও যুক্ত করেন, বিবাহিত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের সময় পারিবারিক চাপ ও মানসিক দ্বন্দ্ব অনেক সময় দক্ষতা ও কর্মক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। সেজন্য অবিবাহিত, শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্তদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
এই প্রস্তাব নিয়ে আইন, মানবাধিকার এবং পেশাগত বৈষম্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হতে পারে। কারণ, বৈবাহিক অবস্থা অনুযায়ী পেশাগত যোগ্যতা নির্ধারণে বৈষম্যের প্রশ্ন জড়িত। তবে প্রস্তাবটি এখনো বাস্তবায়নের পর্যায়ে যায়নি, এটি শুধুমাত্র একাডেমিক পর্যায়ের পরামর্শ হিসেবে এসেছে।
পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সাংগঠনিক সংস্কার এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার বিষয়গুলো সামনে এনে অনুষ্ঠানে বড় ধরনের আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার বা কমিশন পর্যায়ে এই দাবিগুলো কতটা গুরুত্ব পায়।
Leave a Reply