হঠাৎ করে রাতের বেলা তীব্র চুলকানি শুরু হচ্ছে? আঙুলের ফাঁক, কবজি কিংবা পেটের চারপাশে অস্বস্তিকর র্যাশ দেখা দিচ্ছে? হতে পারে আপনি আক্রান্ত হয়েছেন স্ক্যাবিস বা খোস-পাঁছড়া রোগে। এটি এমন এক ধরনের চর্মরোগ, যা সারকোপটিস স্ক্যাবি নামের এক ক্ষুদ্র পরজীবী মাইটের আক্রমণে হয়। শিশুরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হলেও, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কেউ এতে আক্রান্ত হতে পারেন।
স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে শরীরের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে শুরু হয় তীব্র চুলকানি ও ছোট ছোট র্যাশ। এই পরজীবী মাইট ত্বকের ভেতরে ডিম পাড়ে, ফলে তৈরি হয় ফুসকুড়ি ও দগদগে চুলকানি। রাতে এর তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে এটি পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য।চলুন জেনে নেওয়া যাক এই রোগের বিস্তারিত লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ পদ্ধতি।
স্ক্যাবিস বা খোস-পাঁছড়ার প্রধান লক্ষণ:
স্ক্যাবিস হলে প্রথম লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয় অস্বাভাবিক চুলকানি। এটি সাধারণত সারা শরীরে হলেও বিশেষ করে বেশি হয় আঙুলের ফাঁকে, কবজি, কনুই, বুকের নিচে, আন্ডারআর্ম, পেট, নাভির চারপাশে এবং পায়ের পাশে।চুলকানির সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় ছোট ছোট র্যাশ বা ফুসকুড়ি। চিকিৎসা না করালে এগুলো ক্রমে ঘায়ে পরিণত হয়।
প্রতিরোধ ও সতর্কতা:
স্ক্যাবিস প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।নিয়মিত গোসল, পরিষ্কার পোশাক পরা এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকা এই রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।স্ক্যাবিস সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে, চাদর বা পোশাক ব্যবহার করা যাবে না।বাড়ির কেউ আক্রান্ত হলে তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা রাখতে হবে এবং পরিবারের সদস্যদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত।
চিকিৎসা ও পরামর্শ:
স্ক্যাবিস একটি চিকিৎসাযোগ্য রোগ। তবে এর চিকিৎসা হতে হবে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী।প্রথমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং পরে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ওষুধ বা মলম।এই ওষুধ ব্যবহারে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, কারণ ভুল চিকিৎসায় সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
খোস-পাঁছড়া বা স্ক্যাবিস যেমন সংক্রমণযোগ্য, তেমনি উপেক্ষা করলে এটি হতে পারে ভয়াবহ। তাই চুলকানি বা ত্বকে অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিজেকে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখতে সচেতন থাকুন।
Leave a Reply