free tracking

My Blog

My WordPress Blog

আপনার লিভার ধ্বংস করছে যে তিন খাবার!

শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, অথচ সবচেয়ে উপেক্ষিত একটি অঙ্গ হলো লিভার বা যকৃত। এটি খাবার হজম করা, শক্তি সংরক্ষণ, ও বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেওয়ার মতো অনেক গুরুতর কাজ করে। আমরা অনেকেই জানি যে, অ্যালকোহল লিভারের ক্ষতি করে এবং তা সত্যিও বটে।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, অ্যালকোহল ছাড়াও আরও কিছু প্রতিদিন খাওয়া-হওয়া সাধারণ খাবার লিভারকে নীরবে মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে।

একজন মার্কিন চিকিৎসক সম্প্রতি সতর্ক করে দিয়েছেন এমন তিনটি খাবারের ব্যাপারে, যেগুলো আপনার লিভারের জন্য হতে পারে সবচেয়ে ক্ষতিকর। জেনে নিন সেই খাবারগুলো কোন কোনটি।

১. ফ্রুক্টোজ-সমৃদ্ধ খাবার
ফ্রুক্টোজ এক ধরনের চিনি, যা প্রাকৃতিকভাবে ফলমূলের মধ্যে থাকে। তবে সমস্যা হচ্ছে অতিরিক্ত যোগ করা ফ্রুক্টোজ বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার ও মিষ্টি পানীয়ের মধ্যে। সোডা, ক্যান্ডি, কেক, বিস্কুট, বেকারি আইটেম ও প্যাকেটজাত স্ন্যাকস এসব খাবারে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ থাকে অনেক বেশি।

অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ খাওয়ার ফলে লিভার সেটিকে চর্বিতে রূপান্তর করে। ফলে লিভার কোষে চর্বি জমে তৈরি হয় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। দীর্ঘমেয়াদে এই চর্বি জমা গিয়ে লিভারে প্রদাহ, ক্ষত বা স্কার ও এমনকি লিভার ফেলিওরের ঝুঁকি তৈরি করে।

এ ছাড়া, ফ্রুক্টোজ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে, যার ফলে দেহ ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা হারায় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। আরও খারাপ বিষয় হলো, অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়ায়, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

২. ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিড অয়েল (শিল্পজাত বীজতেল)
সয়াবিন তেল, কর্ন অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, ও ক্যানোলা অয়েলের মতো বীজতেল আমাদের প্রতিদিনের রান্না ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এসব তেলে থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরে ওমেগা-৩ এর সঙ্গে ভারসাম্য নষ্ট করে। এই ভারসাম্যহীনতা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে যা লিভারসহ পুরো শরীরের বিভিন্ন রোগের মূল উৎস।

এই তেলগুলো গরম হলে খুব সহজেই অক্সিডাইজড হয়ে যায়, যার ফলে তৈরি হয় ট্রান্স ফ্যাট ও লিপিড পারঅক্সাইডস-এর মতো বিষাক্ত উপাদান। এসব উপাদান লিভার কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায় ও প্রদাহ সৃষ্টি করে। একাধিকবার গরম করে ব্যবহার (যেমন ডিপ ফ্রাই) করলে এই তেল আরও ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।

এই তেল নিয়মিত খাওয়ার সঙ্গে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, বাতব্যথা এবং এমন কিছু বিপাকীয় সমস্যা জড়িত, যা শেষ পর্যন্ত লিভারে বাড়তি চাপ ফেলে।

৩. ফলের রস
অনেকেই ভাবেন ফলের রস একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়, কিন্তু বাস্তবে এটি মূলত চিনি দিয়ে তৈরি এক ধরনের তরল যেখানে পুরো ফলে থাকা আঁশ থাকে না। ফলের রস নিয়মিত খাওয়া মানে আপনার লিভারে অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ ঢুকছে, যা লিভারে চর্বি জমা ও অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।

গোটা ফল খাওয়ার সময় যেভাবে শরীরে ধীরে ধীরে চিনি মেশে, ফলের রস তা করে না। বরং এটি রক্তে হঠাৎ করে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে ইনসুলিনের মাত্রাও দ্রুত বাড়ে। এর ফলে শরীরে চর্বি জমে এবং ফ্যাটি লিভার ডিজিজের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অধিকাংশ ফলের রসে আবার অতিরিক্ত চিনি যোগ করা থাকে, যা ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

ফল খেতে চাইলে সম্পূর্ণ ফল খান। আর রস খেতে চাইলে ঘরে তৈরি ঠান্ডা প্রেসড রস পান করুন, কোনোভাবেই চিনি যোগ করবেন না।

সূত্র:https://tinyurl.com/2s45ff2y

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *