মে মাসের শুরুতে রাতের আকাশে রয়েছে নানা চমক। উল্কাবৃষ্টি, উজ্জ্বল গ্রহরাজি এবং একটি সম্ভাব্য ‘নতুন তারা’ বা নবতারার অপেক্ষা—সব মিলিয়ে শৌখিন মহাকাশ পর্যবেক্ষকদের জন্য এটি এক বিশেষ মাস। নিচে রয়েছে এই মাসের প্রধান প্রধান মহাকাশীয় ঘটনাগুলো:
এটা অ্যাকোয়ারিড উল্কাবৃষ্টি: ৬ মে
মে মাসের ৬ তারিখে দেখা যাবে বিখ্যাত Eta Aquarid উল্কাবৃষ্টি, যার উৎস হ্যালির ধূমকেতু। ৩-৬ মে রাতগুলোতে এই উল্কাপাতের সেরা সময়। এই সময় চাঁদ ভোর ৩টার দিকে অস্ত যাবে, ফলে আকাশ থাকবে অন্ধকার ও পর্যবেক্ষণের জন্য আদর্শ।
উত্তর গোলার্ধে প্রতি ঘণ্টায় ১০-২০টি উল্কা দেখা যেতে পারে, তবে দক্ষিণ গোলার্ধে সংখ্যাটি আরও বেশি।
মে মাসের গ্রহ ও চাঁদের সময়সূচি
- শুক্র (Venus): পূর্ব আকাশে ভোরে খুব উজ্জ্বল, সূর্যোদয়ের আগে দেখা যাবে।
- মঙ্গল (Mars): সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে সহজেই দৃশ্যমান, মধ্যরাত পর্যন্ত থাকে।
- বৃহস্পতি (Jupiter): সন্ধ্যার পর পশ্চিমে দেখা যাবে, ধীরে ধীরে সময় কমে ৯টা ৩০ মিনিটে অস্ত যাবে।
- শনি (Saturn): মাসের শুরুতে শুক্রের পাশে, পূর্বে নিচু; ধীরে ধীরে উঁচুতে উঠবে।
মে মাসের বিশেষ দিনগুলো:
- ৩ মে: প্রথম চতুর্থাংশ চাঁদ ও মঙ্গল একসাথে থাকবে পশ্চিম আকাশে।
- ২৩ মে: ভোরের পূর্ব আকাশে শুক্র ও শনি গ্রহের মাঝখানে থাকবে ক্রমেই ক্ষীণ হতে থাকা চাঁদ।
নবতারার অপেক্ষায়: T Coronae Borealis
প্রায় ৮০ বছর পর ফের T Coronae Borealis নামক একটি নবতারা (nova) দেখা যেতে পারে। এটি একটি দ্বিস্তরীয় তারা ব্যবস্থা, যেখানে একটি লাল দানব তারা এবং একটি সাদা বামন তারার সংমিশ্রণে প্রায় ৮০ বছরে একবার বিস্ফোরণ ঘটে।
এই নবতারা Corona Borealis (উত্তরীয় মুকুট) নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত। সাধারণত এটি খালি চোখে দেখা যায় না, তবে বিস্ফোরণের সময় এটি হবে ওই মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারার মতো উজ্জ্বল—প্রায় ধ্রুবতারার সমতুল্য।
নক্ষত্রটি ঠিক কবে উজ্জ্বল হবে তা নিশ্চিত নয়, তবে ২০২৪ সাল থেকে এটি নজরদারির মধ্যে আছে এবং সম্প্রতি এর উজ্জ্বলতা হ্রাস পাওয়ায় বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে বিস্ফোরণ আসন্জাব।
আর্কটুরাস ও ভেগা নামক উজ্জ্বল তারার মাঝামাঝি খুঁজলে পাবেন Corona Borealis। Big Dipper-এর হ্যান্ডল ব্যবহার করে আপনি সহজেই সেই অংশে নজর দিতে পারেন।
মে মাসের চাঁদের ধাপসমূহ
- প্রথম চাঁদার কোয়ার্টার: ৪ মে
- পূর্ণিমা: ১২ মে
- শেষ কোয়ার্টার: ২০ মে
- অমাবস্যা: ২৬ মে
এই মাসে রাতের আকাশে চোখ রাখলে মিলতে পারে দারুণ অভিজ্ঞতা—উল্কাপাত, গ্রহের সমাবেশ এবং এক দুষ্প্রাপ্য ‘নবতারা’র সম্ভাব্য আবির্ভাব। স্পষ্ট আকাশ ও দূষণমুক্ত পরিবেশে পর্যবেক্ষণের জন্য এখনই প্রস্তুতি নিতে পারেন।
তথ্যসূত্র: নাসা
Leave a Reply