free tracking

My Blog

My WordPress Blog

রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খালি পেটে খেতে হবে যে ৬ খাবার!

আজকের দিনে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ যেন নিত্যসঙ্গী রোগে পরিণত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এই দুই অসুখে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস কিংবা জীবনযাপনের ধরণ সব কিছুর প্রভাবেই তরুণদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে এই সমস্যাগুলো। বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৮৩০ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, শুধু ভারতে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন প্রায় ২২ কোটি মানুষ।

এই দুই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সবার আগে নজর দিতে হবে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে কিছু নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণ করলে রক্তে শর্করা ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন ৬টি খাবার খালি পেটে খেলে দিনটা শুরু হবে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকরভাবে।

১. আমলকি
ভিটামিন C এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর আমলকি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ দুইই নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকর। খালি পেটে আমলকি খেলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত হয় এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত ওঠানামা করতে পারে না। পাশাপাশি কোলেস্টেরল কমাতে ও হার্টের যত্ন নিতে সাহায্য করে এই ফল।

২. দারচিনি পানি ও গোলমরিচ গুঁড়ো
দারচিনি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে যদি সামান্য গোলমরিচ গুঁড়ো মেশানো যায়, তাহলে তার উপকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায়। কারণ গোলমরিচে থাকা পাইপারিন শরীরে পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা বাড়ায়। খালি পেটে এই পানীয় খেলে রক্তচাপ ও রক্তের চিনির মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।

৩. মেথি ভেজানো পানি
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বহু বছর ধরেই ব্যবহৃত হচ্ছে মেথি। এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে শর্করার শোষণ ধীর করে দেয় এবং তা দীর্ঘ সময় ধরে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এক চামচ মেথি রাতভর পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে ও রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে আসে।

৪. হলুদের পানি ও লেবুর রস
হলুদে থাকা কুরকুমিন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। এতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত হয়। এর সঙ্গে লেবুর রস মেশালে পাচনতন্ত্র পরিষ্কার থাকে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা ভালো হয়। খালি পেটে এই মিশ্রণ খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে এবং রক্তে চিনির মাত্রাও স্থিতিশীল থাকে।

৫. ফ্ল্যাক্সসিড (তিসি বীজ)
তিসি বীজে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট—যা রক্তে চিনির মাত্রা এবং রক্তচাপ দুটোই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এই বীজ কার্বোহাইড্রেটের হজমের গতি কমিয়ে দিয়ে রক্তে শর্করার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। সকালে খালি পেটে গুঁড়ো করা ফ্ল্যাক্সসিড পানিতে মিশিয়ে বা স্মুদি-তে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

৬. টমেটো ও বেদানার রস
টমেটোতে থাকা লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। বেদানার রস রক্তসঞ্চালন ভালো রাখে এবং প্রদাহ কমায়। এই দুই ফলের রস একসাথে খালি পেটে পান করলে হার্ট ভালো থাকে, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও কমে।

সতর্ক খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে রক্ষাকবচ
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাসই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। ফাইবারযুক্ত খাবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, লিন প্রোটিন এবং সঠিক পরিমাণে স্বাস্থ্যকর চর্বি—এই উপাদানগুলো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে রক্তে শর্করার মাত্রা ও রক্তচাপ সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। পাশাপাশি সঠিক সময়ে খাওয়া, পর্যাপ্ত জল পান, এবং অতিরিক্ত নুন, চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলাও জরুরি।

ডায়াবেটিস কেন এত বিপজ্জনক?
ডায়াবেটিস কেবল একটি অসুখ নয় এটি একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে। নিয়ন্ত্রণে না থাকলে এটি হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, কিডনি বিকল, স্নায়ু ক্ষতিসহ চোখের দৃষ্টিশক্তিও হ্রাস করতে পারে। ত্বকে ক্ষত হলে তা সহজে সারে না এবং সংক্রমণ দ্রুত ছড়ায়। এমনকি পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত কেটে ফেলতে হতে পারে। এ কারণে নিয়মিত রক্তচাপ ও রক্তে গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণ এবং খাদ্যাভ্যাসে শৃঙ্খলা বজায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।

সূত্র:https://tinyurl.com/25bkh974

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *