ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটে হঠাৎই যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ দেখা গেল। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছে ভারত ও পাকিস্তান। সেই হামলার জের ধরে পরিস্থিতি এখন রীতিমতো যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে। এরই মধ্যে দুই দেশ একে অপরের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
ফোনালাপে পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সাফ জানিয়ে দেন, যেকোনো মূল্যে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা হবে। জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও উভয় দেশকে উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভারত ২২ এপ্রিলের হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ শুরু থেকেই তা অস্বীকার করে আসছে এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্তে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু দিল্লি তাতে সাড়া না দিয়ে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে—আটারি সীমান্ত বন্ধ, সব ধরনের ভিসা বাতিল এবং সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে।
জবাবে পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিত, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ, আকাশসীমা নিষিদ্ধসহ পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে।
গত ৬ মে রাতভর পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের নয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে অন্তত ১০০ জন নিহত হওয়ার দাবি করেছে দিল্লি। এর জবাবে সীমান্তে ব্যাপক গুলিবর্ষণ চালায় পাকিস্তান, যেখানে ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি ইসলামাবাদের। এরপর ৭ মে রাতে ভারতের ১৫টি শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পাকিস্তান।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে, এখন সেদিকেই নজর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের।
Leave a Reply