free tracking

My Blog

My WordPress Blog

শাশুড়ি রাতে দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে দিতো না, দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতো :পলাশ সাহার স্ত্রী

চট্টগ্রামে র‍্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে নিজ অফিস কক্ষে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হওয়া র‍্যাব সদস্য পলাশ সাহার (৩৭) মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সময় তার পাশে পাওয়া চিরকুটে নিজের মৃত্যুর জন্য কারও দায় নেই বলে উল্লেখ থাকলেও, তার স্ত্রী সুস্মিতা সাহা মুখ খুলেছেন এক হৃদয়বিদারক বর্ণনায়।

সুস্মিতা জানান, পলাশ সাহা একজন দায়িত্বশীল স্বামী ও সৎ মানুষ ছিলেন, যিনি তাকে খুব ভালোবাসতেন। কিন্তু তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পলাশের মা। সুস্মিতার ভাষ্য অনুযায়ী, শাশুড়ির অব্যাহত মানসিক নির্যাতন ও হস্তক্ষেপ তাদের সংসার জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।

তিনি জানান,”আমার স্বামী খুব করে চাইতেন আমার সঙ্গে সংসার করতে, কিন্তু ওর মা সেটা করতে দেননি। আমি ওর মায়ের পায়ে পড়েছি, অনুরোধ করেছি, কিন্তু উনি আমাদের একটুখানি জায়গাও দেননি।”

সুস্মিতার দাবি, একই ফ্ল্যাটে থেকেও পলাশ সাহাকে তার রুমে থাকতে দেওয়া হতো না। এমনকি রাতে দরজা বন্ধ করেও তারা ঘুমাতে পারতেন না, দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতো , শাশুড়ি বাধা দিতেন। তিনি আরও জানান, পলাশ তাকে একাধিকবার বলেছেন, “তোমার কোনো দোষ নেই। কিন্তু আমি মাকে কিছু বলতে পারবো না। তুমি একটু সহ্য করো।”

দাম্পত্য জীবনের আড়াই বছর পার হলেও পরিবার পরিকল্পনা করতেও ভয় পেতেন তারা। সুস্মিতার ভাষ্য অনুযায়ী, তার শাশুড়ি ইচ্ছাকৃতভাবে এমন মানসিক চাপ সৃষ্টি করছিলেন যাতে তিনি নিজেই অতিষ্ঠ হয়ে ডিভোর্স দিতে বাধ্য হন। কারণ, ছেলের পক্ষ থেকে ডিভোর্স দিলে চাকরি ও সামাজিক ইমেজ নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারত।

এক পর্যায়ে সহ্যের সীমা অতিক্রম করে সুস্মিতা নিজেও আত্মহননের চেষ্টা করেন। এর পরদিনই ঘটে পলাশ সাহার মর্মান্তিক মৃত্যু।

সুস্মিতা বলেন:”আমার স্বামী আমাকে ডিভোর্স দিতে চাননি, কারণ তিনি জানতেন আমি নির্দোষ। আমাকে ভালোবাসতেন, কিন্তু নিজের মাকে কিছু বলতে পারতেন না। সেই যন্ত্রণার ভার আর নিতে পারেননি।”

তিনি আরও জানান, মৃত্যুর আগে পলাশ চিরকুটে তার দেওয়া বিয়ের গয়নার কথা উল্লেখ করে গেছেন, যাতে ওই স্মৃতিস্বরূপ গয়নাগুলো যেন সুস্মিতাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

পলাশ সাহার প্রতি ভালোবাসায় চোখ ভেজে সুস্মিতা বলেন,”সে ছিল খুব সৎ, নিঃস্বার্থ আর মাতৃভক্ত। কিন্তু সেই মায়ের কাছ থেকেই সে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা পেয়েছে। প্রতিটি মেসেজে সে আমাকে আশ্বস্ত করেছে, আমার কোনো দোষ নেই। আর সহ্য করতে না পেরে সে নিজেকে শেষ করে দিয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *