বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও একটি শোকাবহ দিন। গুলিবিদ্ধ আরাফাত (১২) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আজ সোমবার বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
শোকবার্তাবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সেলের সম্পাদক জাহিদ আহসান এক শোকবার্তায় বলেন,
“শহীদদের মিছিল ভারী করে গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধা আরাফাত শাহাদাতবরণ করেছেন। শাহাদাতবরণ আমাদের বেদনাতুর করে, একইসঙ্গে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাহস জোগায়। শহীদ আরাফাতের মৃত্যুসহ জুলাই গণহত্যার কুশীলবদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
শোকবার্তায় আরও বলা হয়েছে,
“শহীদ আরাফাত আমাদের আন্দোলনের নতুন প্রেরণা। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।”
আরাফাতের চিকিৎসার লড়াই৫ আগস্ট উত্তরার আজমপুর পূর্ব থানার সামনে পুলিশের গুলিতে আহত হয় ১২ বছরের আরাফাত। সে মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিল। প্রথমে তাকে আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে ফেরত দেওয়া হয়। পরে কুর্মিটোলা হাসপাতাল হয়ে সিএমএইচে স্থানান্তরিত করা হয়। দীর্ঘ ৪ মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত এক মাসে তার শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হতে থাকে।
আরাফাতের পরিবার জানিয়েছে, শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ২৪ ডিসেম্বর তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়। তবে তার আগেই রবিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
পরিবার ও আন্দোলনকারীদের দাবিআরাফাতের পরিবার ও আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা তার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। শহীদ আরাফাতের মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের ক্ষতি নয়, বরং পুরো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
আরাফাতের জানাজার মাধ্যমে তাকে চিরবিদায় জানানো হবে, আর সেইসঙ্গে চলমান আন্দোলন তার স্মৃতিকে সঙ্গী করেই এগিয়ে যাবে বলে জানান আন্দোলনের নেতারা।
Leave a Reply