রাজধানীর বনশ্রীতে ছিনতাইয়ের শিকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, দারোয়ানের স্ত্রী যদি গেট খুলে দিত তাহলে আজকে আমার ওপর এই গুলির ঘটনা ঘটতো না। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে বনশ্রীর ডি ব্লকে মুহুর্মুহু গুলি আর ছিনতাইয়ের লোমহর্ষক ঘটনা সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় ফেরার পথে আমার বন্ধুর দোকানে দাঁড়াই। সেখান থেকে বাসার সামনে গিয়ে মোটরসাইকেলটি দাঁড় করাই। আমি দারোয়ানকে গেট খুলতে বলি। এর মধ্যে তিনটা হোন্ডা এসে আমাকে ঘেরাও করে ফেলে। এটি দেখে দারোয়ানের বউ গেট লাগিয়ে দেয়। তখনও তারা আমাকে গুলি বা কুপিয়ে আহত করেনি। আমি দারোয়ানকে বারবার গেট খুলতে বলি কিন্তু সে গেট খুলেনি। পরে আমাকে কুপিয়ে এবং গুলি করে আমার ব্যাগে থাকা ১৪০ ভরির মতো স্বর্ণ ও নগদ এক লাখ টাকা নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, দারোয়ানের স্ত্রী গেট খুলে দিলে আমি কিন্তু বাসার ভেতরে ঢুকে যেতে পারতাম। তাহলে তারা আমার ব্যাগ এবং টাকা কিছুই নিতে পারত না। আমাকে গুলি ও কুপিয়ে জখমও করতে পারত না।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ছিনতাইকারীরা আমাকে ৩টি গুলি করে। আমার দুই পায়ে দুটি গুলি করে। অন্ডকোষের নিচে একটি গুলি লাগে। তবে এখন পর্যন্ত চিকিৎসক জানিয়েছেন- আমার শরীরে কোনো গুলি নেই এবং অণ্ডকোষের একটি অপারেশন হবে। শরীরের যে কয়েকটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে সেগুলোর অপারেশন করা হয়েছে।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, এক সপ্তাহ আগে ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাকে নানাভাবে ভয় ভীতি দেখায় দুর্বৃত্তরা। আমার নামে অবৈধ স্বর্ণ কেনার অভিযোগ তুলে মামলা আছে বলে তারা আমার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা নেয়। পরে তাদের আরও ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তখন আমি তাদের ফোন দেই যে ভাই সরাসরি এসে ১০ হাজার টাকা নিয়ে যান। তখন ওই ব্যক্তি ফোনের ওপার থেকে জানায়- ‘আমি ঢাকার বাইরে আছি, পরে এসে দেখা করব।’ এরপর আমি আবার ফোন দিলে অপর প্রান্ত থেকে বলেছিল- ‘ভাই আমার সিমটি হারিয়ে গিয়েছিল ওই লোকটি প্রতারক ছিল’।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ বলেন, এক্স-রে করে আমরা তার শরীরের ভেতরে গুলি আছে সেটি এখনো দেখতে পাইনি। ধারণা করছি, তার অণ্ডকোষে একটি গুলি লেগেছে। সেটির অপারেশন করা হবে। তবে তিনি এখন সুস্থ আছেন। আশঙ্কার কোনো কিছু নেই।
Leave a Reply