free tracking

My Blog

My WordPress Blog

কমদামে বিক্রি হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও জমি!

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বরিশালে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করা এবং পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের বাড়ি ও জমি কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

নির্ভরযোগ্য একটি গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বরিশালে আওয়ামী লীগের তিন নেতা এবং সরকারের সাবেক এক আমলার বাড়ি ও ফ্ল্যাট বিক্রির বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

যারমধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর প্রায় সাত একরের বাগানবাড়ি, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিমের বেগম ভবন, বিএনপি থেকে সর্বশেষ আওয়ামী লীগে যোগদান করা ব্যারিস্টার শাহাজান ওমরের বীর উত্তম ভবন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুলের ফ্ল্যাট ও জমি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহিদ ফারুক শামিমের নগরীর নবগ্রাম রোডে বেগম ভিলা নামের বাড়িটি ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।

প্রায় তিন কাঠা জমির ওপরে পাঁচতলা বিশিষ্ট বাড়িটির নির্মাণকাজ ২০২৩ সালের শেষ দিকে সম্পন্ন হয়েছিলো। ভবনটি থেকে তার সব রাজনৈতিক কার্যক্রম চলতো। গত বছরের ৪ ও ৫ আগস্ট বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বাড়িটিতে তিন দফা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করেছিলো।

বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা জাহিদ ফারুক শামিমের এ বাড়িটি গত জানুয়ারি মাসে আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাহিদ ফারুক শামিমের একাধিক ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের শেষের দিকে বাড়ির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এর আগে বরিশালে তার কোনো বাড়ি ছিলোনা। তবে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিমের ঢাকায় একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি বরিশাল ও ঢাকার বিভিন্ন মামলায় বন্দি থাকায় সেগুলো দেখভাল করার মতো জনবল নেই। এছাড়া রয়েছে আর্থিক সংকট। ফলে তার বরিশালের একমাত্র বাড়িটি বিক্রি করা হয়েছে।

সূত্রমতে, নগরীর ব্র্যান্ড কম্পাউন্ড এলাকায় আলিশান তিন তলা ডুপ্লেক্স বাড়িটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগের আসা প্রবীণ রাজনীতিক ব্যারিস্টার শাজাহান ওমরের। গত ৫ আগস্টের পর এই বাড়িটির মালিকানাও বদল হয়েছে।

৫০ শতকের বেশি জমিতে থাকা বাড়িটির নতুন মালিক অপসোনিন কোম্পানি লিমিটেড। ইতোমধ্যে তাদের নিরাপত্তাকর্মীরা বাড়িটির সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে তারা এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।

একাধিক নিরাপত্তাকর্মীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বাড়িটির নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের দপ্তরের বিপরীতে অবস্থিত বাড়িটি গত বছরের ৫ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করেছিলো।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল তার ১০ তলা বাড়ির অধিকাংশ ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিয়েছেন। নগরীর নাজিরপুল এলাকার স্ব-রোডে প্রায় ছয় কাঠা জমির ওপর বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। বরিশাল সিটি করপোরেশেনর সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত নীরব হোসেন টুটুল গত ৫ আগস্টের পর ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত করেছেন।

টুটুলের ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, বাড়ি দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা দেখা দেওয়ায় ১০ তলা ভবনের অধিকাংশ ফ্ল্যাট বিক্রি করা হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ির সামনের জমিও প্লট আকারে বিক্রি করা হয়েছে।

সূত্রগুলোর দাবি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব খায়রুল ইসলামের আলোচিত বাগান বাড়িটিও বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে। বরিশাল নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী গ্যাস টারবাইন সড়কের প্রবেশমুখে বাগান বাড়িটি অবস্থিত।

গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, প্রায় সাত একর জমির ওপরে থাকা আলোচিত বাড়িটি বিক্রির বিষয়ে মহানগর বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার সাথে চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। শতকোটি টাকা মূল্যমানের ওই বাড়িটি খুবই কম টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় অসংখ্য বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকেই আলোচিত বাগান বাড়িটি বিক্রি করার গুঞ্জন চলে আসছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *