free tracking

My Blog

My WordPress Blog

ট্রাম্পের নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানালো আমেরিকার আদালত

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্মগ্রহণের মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রাপ্তির দীর্ঘ ১২৭ বছরের রীতি পাল্টে দিতে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সোমবার তিনি এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করেন। নতুন আদেশে বলা হয়েছে, অবৈধ বা কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাবে না। নাগরিকত্ব পেতে হলে বাবা অথবা মা যে কারও একজনকে মার্কিন নাগরিক হতে হবে অথবা বৈধ অভিবাসনের প্রমাণ থাকতে হবে।

তবে এই আদেশটি অস্থায়ীভাবে স্থগিত করেছেন সিয়াটেলের বিভাগীয় বিচারক জন কোগেনর। তিনি এটিকে “সংবিধান পরিপন্থি” বলে অভিহিত করেন এবং ওয়াশিংটন, অ্যারিজোনা, ইলিনয়েস ও ওরিগনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় দেন। যদিও ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

ভারতীয় অভিবাসীদের সিজারের প্রতি আগ্রহট্রাম্পের নতুন আদেশে নাগরিকত্ব নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রে এইচ১বি ও এল-১ ভিসাধারী ভারতীয় গর্ভবতী নারীরা সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের আগেই সিজার করানোর প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আদেশ অনুযায়ী, ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে। এর আগেই সন্তান জন্মানোর জন্য তারা সিজার করানোর কথা ভাবছেন, যাতে তাদের সন্তান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বের অধিকার পায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, বেশিরভাগ ভারতীয় নারী যারা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন, তাদের গর্ভাবস্থা ৮ বা ৯ মাসে রয়েছে। একজন চিকিৎসক এসডি রোমা জানিয়েছেন, এমনকি সাত মাসের গর্ভবতী এক নারীর স্বামীও তার স্ত্রীর সিজারের রেজিস্ট্রেশনের জন্য এসেছিলেন।

তবে চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন যে নির্ধারিত সময়ের আগেই সিজার করালে নবজাতকদের গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হতে হতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসজি মুক্কালা বলেন, “এ ধরনের তাড়াহুড়ো নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা তৈরি করবে।”

সংবিধান বনাম ট্রাম্পের উদ্যোগট্রাম্পের এই আদেশ মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করেছে। এই সংশোধনীতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বিরোধীরা মনে করছেন, এটি সংবিধানের মূল ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য সৃষ্টি করবে।

যদিও ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার লক্ষ্য অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিবাসী সমাজে উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব পাওয়ার যে ঐতিহ্য ছিল, তা ভেঙে যাবে। বিচার বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের জন্য পুরো বিশ্ব এখন অপেক্ষায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *