free tracking

My Blog

My WordPress Blog

মিশরে চীনা যুদ্ধবিমান মোতায়েন, ইসরায়েলকে নতুন বার্তা!

মিশরের সাহারার বালুময় মরুভূমি হঠাৎই কেঁপে উঠেছে চীনা যুদ্ধবিমানের গর্জনে। প্রথমবারের মতো মিশরের ওয়াদী আবরিশ বিমান ঘাঁটিতে যৌথ বিমান মহড়ায় অংশ নিয়েছে চীন, যার নাম দেওয়া হয়েছে ইগলস অফ সিভিলাইজেশন ২০২৫। এই মহড়া কেবল সামরিক প্রদর্শনী নয়, বরং এটি এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বার্তাও বহন করছে— বিশেষ করে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে।

চীন তাদের সর্বাধুনিক জে-১০সি যুদ্ধবিমান, আকাশে জ্বালানি সরবরাহকারী ওয়াই-২০ইউ ট্যাংকার এবং কেজি-৫০০ রাডার বিমান নিয়ে এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। অন্যদিকে, মিশর অংশ নিচ্ছে রুশ নির্মিত মিগ-২৯ এমএমটিই মাল্টিরোল ফাইটার নিয়ে। মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে এই যৌথ মহড়া।

প্রশ্ন উঠছে— মিশর কেন এই সময়ে চীনের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা জোরদার করছে, যেখানে তারা প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পায়? বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি চীনের আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তারের সুপরিকল্পিত কৌশলের অংশ। তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে চীনের মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র বিক্রি ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সৌদি আরব, ইরান এমনকি হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গেও চীনের সামরিক যোগাযোগের ইঙ্গিত মিলছে।

মিশরের জন্য এই মহড়ার তাৎপর্য দ্বিমুখী। একদিকে এটি চীনা জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার গুঞ্জন জোরালো করছে, অন্যদিকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের গাজা উদ্বাস্তুদের মিশরে পাঠানোর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে একটি কৌশলগত জবাব হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ ব্যবহারে নির্ভরশীল মিশর এখন প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও অনুমোদনের জটিল প্রক্রিয়ায় বিরক্ত হয়ে বিকল্প খুঁজছে—সেই শূন্যস্থানে ঢুকে পড়েছে চীন।

চীন শুধু যুদ্ধবিমান বা প্রযুক্তি দিচ্ছে না; বরং প্রমাণ করছে কিভাবে তারা ৬,০০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে বিশাল বহর ও সরঞ্জাম মোতায়ন করতে সক্ষম। এটি চীনের বৈশ্বিক এয়ার মোবিলিটি সক্ষমতার এক বাস্তব নমুনা, যা যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।

অন্যদিকে, লোহিত সাগরের নিরাপত্তা ও বাণিজ্যপথে চীনা প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। ইতোমধ্যে জিবুতিতে চীনের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, এবং গালফ অফ সুয়েজ ও হরমুজ প্রণালীতেও তাদের উপস্থিতি স্পষ্ট। ফলে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য এখন হয়ে উঠছে এক নতুন ভূরাজনৈতিক সংঘর্ষ ক্ষেত্র, যেখানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি।

সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে— এই মহড়া কি কেবল এক যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ, নাকি এটি এক নতুন ভূরাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা?

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/8KXvBt6iYV8?si=EH1x6c8p2iiNK3yX

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *