free tracking

My Blog

My WordPress Blog

দ্বিতীয়বার গরম করলে বিষাক্ত হয়ে যায় যে ৭ খাবার!

রোজকার ব্যস্ত জীবনে রান্না করা খাবার ফ্রিজে রেখে আবার গরম করে খাওয়া এখন অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কিন্তু জানেন কি, কিছু নির্দিষ্ট খাবার আছে যেগুলো দ্বিতীয়বার গরম করলে তা কেবল স্বাদ হারায় না, বরং শরীরের জন্য ক্ষতিকরও হয়ে উঠতে পারে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু খাবারে এমন উপাদান থাকে, যা বারবার তাপ দিলে রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বিষাক্ত যৌগে রূপ নিতে পারে। নিচে এমন সাতটি সাধারণ খাবারের তালিকা তুলে ধরা হলো, যেগুলো বারবার গরম না করাই ভালো।

১. চা
বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি পানীয় হলেও, চা ঠান্ডা হয়ে গেলে তা আবার গরম করে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চায়ে থাকা কিছু উপাদান উচ্চ তাপে গিয়ে অক্সিডেশন প্রক্রিয়ায় অ্যাসিডিক যৌগ তৈরি করে, যা পাকস্থলীতে অম্লতা ও বদহজমের সমস্যা বাড়াতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এটি গ্যাস্ট্রিকেরও কারণ হতে পারে। তাই চা উষ্ণ থাকতে থাকতেই পান করাই উত্তম।

২. রান্না করা আলু
আলু এমন একটি খাবার, যা প্রায় সব রান্নাতেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু রান্নার পর দীর্ঘ সময় আলু রেখে আবার গরম করলে এর স্টার্চ ধীরে ধীরে ভেঙে ক্ষতিকর যৌগ তৈরি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, কক্ষ তাপমাত্রায় রাখলে রান্না করা আলুতে ব্যাসিলাস সিরাস নামক ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে, যা খাদ্য বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে। এ কারণে রান্না করা আলু দ্রুত ঠান্ডা করে সংরক্ষণ এবং একবারেই খেয়ে ফেলার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।

৩. ডিম
ডিমে প্রচুর প্রোটিন থাকায় এটি একটি শক্তিশালী পুষ্টির উৎস। কিন্তু একে পুনরায় বেশি গরম করলে প্রোটিনের গঠন পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং তাতে টক্সিক যৌগ তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে সেদ্ধ বা পোচ করা ডিম বারবার গরম করলে তা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই ডিম সদ্য রান্না করেই খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।

৪. পালং শাক
এই শাকে প্রচুর আয়রন ও নাইট্রেট থাকে, যা দেহের জন্য উপকারী। কিন্তু পালং শাক বারবার গরম করলে নাইট্রেট নাইট্রাইটে পরিণত হয় এবং তা থেকে নাইট্রোসামিন নামক ক্ষতিকর যৌগ তৈরি হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ফলে, শাক-সবজি রান্নার পর পরই খেয়ে ফেলাই উত্তম।

৫. রান্নার তেল
একবার ব্যবহার করা তেল পুনরায় গরম করা হলে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বারবার গরম করলে তেলে অক্সিডেটিভ রিঅ্যাকশন হয়ে যায়, যার ফলে ফ্রি র‍্যাডিক্যাল তৈরি হয়। এই ক্ষতিকর উপাদানগুলো শরীরে ঢুকে কোষ ধ্বংস করে এবং দীর্ঘমেয়াদে তা হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার কিংবা লিভারের সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই ব্যবহৃত তেল পুনরায় ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।

৬. ভাত
ভাত হলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম প্রধান খাবার। কিন্তু রান্নার পর তা দীর্ঘ সময় রেখে পুনরায় গরম করলে ‘ব্যাসিলাস সেরিয়াস’ নামক একধরনের ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যেতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া এমন একটি টক্সিন তৈরি করে, যা পাকস্থলীতে ঢুকে ডায়রিয়া, বমি, ও পেটব্যথার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভাত রান্নার ১–২ ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে ফেলাই নিরাপদ।

৭. মাশরুম
মাশরুমে প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকলেও এটি দ্বিতীয়বার গরম করা বিপজ্জনক। উচ্চ তাপে মাশরুমের প্রোটিন গঠন ভেঙে টক্সিন তৈরি করে, যা হজমে সমস্যা এবং কখনও কখনও ফুড পয়জনিংয়ের কারণ হতে পারে। তাই মাশরুম রান্না হলে সেটি সংরক্ষণ না করে তাৎক্ষণিক খাওয়াই শ্রেয়।

সতর্কতা জরুরি
স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষক ও পুষ্টিবিদদের মতে, রান্না করা খাবার সংরক্ষণ এবং পুনরায় গরম করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। সময় বাঁচাতে খাবার সংরক্ষণ করা যেতেই পারে, তবে কী খাবার কেমনভাবে সংরক্ষণ ও গরম করা হচ্ছে।তা না জেনে ফেলা এক বড় ভুল।

এক কথায় বলা যায়, শরীর সুস্থ রাখতে শুধু খাবার নয়, খাবারের প্রক্রিয়া সম্পর্কেও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তাই আজ থেকেই এসব অভ্যাস নিয়ে ভাবুন।কারণ একটি ছোট ভুল হতে পারে বড় বিপদের কারণ।

সূত্র:https://tinyurl.com/bdcpczuv

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *