free tracking

My Blog

My WordPress Blog

যেভাবে পালালেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা, তালিকা প্রকাশ!

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অনেক নেতা, মন্ত্রী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। ভারতের কলকাতা ও দিল্লি হয়ে উঠেছে তাদের অন্যতম বড় আশ্রয়স্থল। পাশাপাশি দুবাই, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশে পালিয়ে গেছেন অনেকে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ‘জুলাই বিপ্লব’-এর পরপরই শেখ হাসিনা সরকারের বেশিরভাগ মন্ত্রী-নেতা দেশ ছেড়ে পালান। কেউ কেউ ৫ আগস্টের আগেই নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশ ত্যাগ করেন। সর্বশেষ পালানোর তালিকায় আছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, যিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে থাইল্যান্ড গেলেও তার গন্তব্য হচ্ছে ভারতের দিল্লি।

গণঅভ্যুত্থানের দিন সাবেক স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী সংসদ ভবনের বাংকারে লুকিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী তাকে উদ্ধার করে ঢাকার সেনানিবাসে নিয়ে যায়, যেখানে তিনি এখনো অবস্থান করছেন।

আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ গুরুতর অসুস্থ থাকায় আলোচনার বাইরে। এদিকে সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের মধ্যে অন্তত ১২ জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন আমির হোসেন আমু, সালমান এফ রহমান, ডা. দীপু মনি, ইনু, মেনন, পলক ও সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা।

২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট আইএসপিআর জানায়, নিরাপত্তার স্বার্থে ৬২৬ জন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিকে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরিস্থিতির উন্নয়নের পর ৬১৫ জন স্বেচ্ছায় চলে যান। বাকিদের মধ্যে কয়েকজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বেশিরভাগ পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। এছাড়া সিলেট, চট্টগ্রাম, আখাউড়া, ফেনী ও সাতক্ষীরার সীমান্তপথ ব্যবহার করা হয়।

দু’শরও বেশি প্রভাবশালী নেতা এখন ভারতের বিভিন্ন শহরে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নওফেল, মায়া, বাহাউদ্দিন নাছিম, এবং সাবেক গোয়েন্দা প্রধান মনিরুল ইসলাম।

নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক চট্টগ্রাম হয়ে সাগরপথে টেকনাফ দিয়ে ভারতে পালান এবং পরে লন্ডনে চলে যান। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিমানে না নিয়ে তাদের স্ত্রীদের পাঠান। এ পলায়নের ধরন গোপন তৎপরতার ইঙ্গিত দেয়।

হাছান মাহমুদ ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ আরাফাত চট্টগ্রাম থেকে একটি চার্টার্ড বিমানে পালিয়ে প্রথমে সিঙ্গাপুর, পরে বেলজিয়াম ও যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, শফিকুর রহমান চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম ও বিপ্লব বড়ুয়া।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ কম্বোডিয়ায় গাড়ি ও সম্পত্তি কিনে বসবাস করছেন। শেখ ফজলে নূর তাপস এখন লন্ডনে, তার ভাই শেখ পরশ কানাডায়। শেখ হেলাল, সালাহ উদ্দিন ও তন্ময় দিল্লিতে অবস্থান করছেন।

শামীম ওসমান থাইল্যান্ড ও দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। মুস্তফা কামাল দুবাইয়ে এবং বাহাউদ্দিন নাছিম মেঘালয় হয়ে ভারতে যান।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৫ আগস্টের আগে পালাবেন না বললেও পরে কলকাতায় আশ্রয় নেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ আগে থেকেই মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন। বর্তমানে তিনি দুবাই হয়ে স্পেনে আশ্রয় নিয়েছেন। ডিবির হারুন প্রথমে নেপাল ও পরে যুক্তরাষ্ট্রে পালান।

সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিব ময়মনসিংহ সীমান্ত হয়ে ভারতে যান এবং বর্তমানে দিল্লিতে শেখ হাসিনার হয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ এখন ইস্তান্বুলে রয়েছেন। শেখ হাসিনার আত্মীয় নিক্সন চৌধুরী কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছেন এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল মালয়েশিয়ায় রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *